সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার

নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক

আগস্ট ২৮ ২০২৫, ১৯:৫২

প্রতি সপ্তাহের বিশেষ ফজিলতপূর্ণ দিন শুক্রবারকে বলা হয় সাপ্তাহিক ঈদের দিন। কুরআন-হাদিসে শুক্রবারের গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-‘হে ইমানদাররা! জুমার দিনে যখন সালাতের জন্য ডাকা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং কেনাবেচা ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা তা জানতে!’ (সূরা জুমা-৯)।

জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন : হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, সর্বশ্রেষ্ঠ দিন জুমার দিন। এ দিনে হজরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এদিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে (মুসলিম-৮৫৪)। আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূল (সা.) বলেছেন জুমার দিনের চেয়ে উত্তম ও মহান কোনো দিন নেই’ (মুসনাদে আহমাদ-৮১০২)।

মসজিদে আগেভাগে যাওয়া : জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে আগমনকারী ব্যক্তিদের বিভিন্ন স্তরে সওয়াব প্রদান করা হয়। আবু হুরাইরা (রা.) বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করল, অতঃপর দিনের প্রথমভাগে মাসজিদে এলো, সে যেন একটি উট কুরবানি করল। অতঃপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি গরু কুরবানি করল; অতঃপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি ভেড়া কুরবানি করল, অতঃপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি মুরগি কুরবানি করল, অতঃপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি ডিম কুরবানি করল। অতঃপর ইমাম যখন খুতবা দিতে (দাঁড়ালেন) তখন ফেরেশতারা খুতবা শোনার জন্য উপস্থিত হন (মুসলিম-১৮‘৩৪)।

দরুদ পাঠ : দরুদ পাঠ করা একটি স্বতন্ত্র আমল। রাসূল (সা.)-এর নাম শুনলে আমাদের জন্য দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। আর শুক্রবারে দেওয়া হয়েছে বেশি বেশি দরুদ পাঠের নির্দেশনা। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেছেন, জুমাদিন তোমরা আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পড়। কেননা, আমার উম্মতের দরুদ আমার কাছে প্রতি শুক্রবারে পেশ করা হয়। যে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পড়বে, সে কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে (আস-সুনানুল কুবরা-৬২০৮)।

দোয়া কবুল করা হয় : শুক্রবারের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হচ্ছে, এদিন এমন এক সময় রয়েছে যখন আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন রাসূল (সা.)কে জিজ্ঞেস করা হলো, জুমাদিনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী? তখন তিনি কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করার পর বলেন, জুমাদিনে শেষ তিন ঘণ্টায় এমন কিছু সময় রয়েছে, যে সময়ে বান্দা আল্লাহর কাছে যে দোয়া করে, আল্লাহ সে দোয়া কবুল করেন (মুসনাদে আহমাদ-৮১০২)।

সূরা কাহাফ তিলাওয়াত : জুমার দিন যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তাকে পুরো সপ্তাহ সব ধরনের ফেতনা থেকে নিরাপদে রাখবেন। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, যে জুমার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাকে সব ধরনের ফিতনা থেকে পুরো সপ্তাহ নিরাপদ রাখবেন। যদি দাজ্জালও বের হয়, তবু আল্লাহ তাকে নিরাপদ রাখবেন (আল আহাদিসুল মুখতারা হাদিস নং ৪২৯)।

জুমার নামাজ পরিত্যাগকারীর শাস্তি : জুমার নামাজ পরিত্যাগকারীর অন্তরে মোহর এঁটে দেওয়া ও তাদের উদাসদের দলভুক্ত করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কা’ব ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, ‘এমন একদল আসবে, জুমার দিন আজান শোনার পরও তারা মসজিদে আসবে না, আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। এরপর তারা উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ে যাবে (মুসলিম-৮৬৫)।